October 24, 2024, 4:33 pm
পাট কে বলা হয় সোনালি আঁশ । দীর্ঘদিন যাবত অবহহেলার কারনে ঐতিহ্যবাহী এই শিল্প হারিয়ে যেতে বসেছিল। আশার কথা হল আবারো নতুন উদ্দমে নতুনভাবে আলোচনায় এসেছে পাট শিল্প। নতুন কিছুই হয়তো উদ্ভবন করতে পেরেছে বাংলাদেশের গবেষকরা । হ্যা পাট থেকেই তৈরি হচ্ছে পলি ব্যাগ। দেখতে পলিথিনের মত হলেও নেই কোন প্ল্যাস্টিক । ব্যাগগুলো বানানো হয়েছে কেবলই পাটের আঁশ ব্যবহার করে। এই আঁশ থেকে পচনশীল পলিমার ব্যাগ তৈরির পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশের এক বিজ্ঞানী। আমদানি করা যেসব পচনশীল পলিমার ব্যাগ বাজারে পাওয়া যায়, তার ৫ ভাগের ১ ভাগ দামেই এটি পাওয়া যাবে।
রাজধানীর ডেমরার লতিফ বাওয়ানী জুট মিলে পরীক্ষামূলকভাবে স্বল্প পরিমাণে তৈরি হচ্ছে এ পলিমার ব্যাগ। আয়োজন চলছে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাওয়ার। কিন্তু এরই মধ্যে দেশের ভেতরে, বিশেষ করে রপ্তানিমুখী শিল্পমালিকেরা এ ব্যাগ কেনার জন্য বায়না দিতে শুরু করেছেন। দেশের বাইরে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্য থেকেও এ ব্যাগের চাহিদা আসছে।
পাটের তৈরি এ পলিব্যাগ দেখতে বাজারের সাধারণ পলিথিন ব্যাগের মতো হলেও এটি অনেক বেশি টেকসই ও মজবুত। পাটের সূক্ষ্ম সেলুলোজকে প্রক্রিয়াজাত করে তৈরি করা এ পলিব্যাগ কয়েক মাসের মধ্যে পচে মাটির সঙ্গে মিশে যায়। ফলে এটি পরিবেশ দূষণ করে না। এটিকে তাই পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পলিথিনের একটি নির্ভরযোগ্য বিকল্প হিসেবে ভাবা হচ্ছে।
পাটের আঁশ থেকে পলিমার তৈরির এ পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা অধ্যাপক মোবারক আহমদ খান। ২০ বছর ধরে তিনি পাটের বাণিজ্যিক ব্যবহার নিয়ে গবেষণা করছেন। এই পদ্ধতি উদ্ভাবনের জন্য বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমি তাঁকে ২০১৫ সালে স্বর্ণপদক দেয়। ২০০৯ সালে এই বিজ্ঞানী পাটের সঙ্গে পলিমারের মিশ্রণ ঘটিয়ে মজবুত, তাপ বিকিরণরোধী ও সাশ্রয়ী ঢেউটিন ‘জুটিন’ বানান।
একই প্রযুক্তি ও কাঁচামাল ব্যবহার করে তিনি হালকা অথচ মজবুত হেলমেট, স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগারের রিং, স্ল্যাব, চেয়ার, টেবিল, টাইলসসহ বেশ কয়েকটি নিত্যব্যবহার্য পণ্য তৈরি করেছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে , আবারো পাঠ তার হারানো গৌরব ফিরে পেতে পারে। আয় হবে হাজার কোটি টাকা । হয়ে উঠতে পারে সোনালি আঁশ ।